এক পরিচিতি ও মহিমা
الفقه على المذاهب الأربعة: এক পরিচিতি ও মহিমা
মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ত্বলহা দ্বীনের দ্বীপ্তি
আলহামদুলিল্লাহ, আমি আলহামদুলিল্লাহ যখন الفقه على المذاهب الأربعة নাম জানলাম , তখন একটি গভীর আকর্ষণ অনুভব করলাম, সেটা সত্যি। কারণ এই কিতাব শুধু একটি বই নয়—এটি এক অভিজাত সংকলন যা ফিকহের চারটি ইসলামী মাযহাবকে সম্মিলিতভাবে উপস্থাপন করেছে। আমি অনেক দিন ধরেই এই নাম শুনেছি এবং গত মঙ্গলবার মাদ্রাসার মাকতাবায় যখন এটি দেখলাম, তখন থেকে আমার অন্তরে এক প্রবল কৌতুহল জাগল—“এই কিতাবটিতে কি আছে? কি লেখা আছে?” সেই কৌতূহলকে ভিতরেই ধারণ করে আমি বৃহস্পতিবার নির্ধারণ করেছিলাম—আজ কিছু অংশ মুতালাআ করব। আলহামদুলিল্লাহ আজ দুপুর থেকে কিছু সময় ধরে পড়তে শুরু করলাম— ওহ, সেই মুহূর্তে যে আনন্দ অনুভব করলাম, আগের কখনো হয়নি। আজ আমি তোমার সামনে কিছু তথ্য ও অনুভূতি নিয়ে এই কিতাবটির প্রতি আমার ভালোবাসা তুলে ধরব।
মূল লেখক ও পরিচয়
الفقه على المذاهب الأربعة কিতাবের মুসান্নিফ عبد الرحمن بن محمد عوض الجزيري, যিনি 1299 হিজরী (1882 খ্রিস্টাব্দ) সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি الأزهر বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেন এবং হানাফি মাযহাবে মুহাক্কিক (গভীরতা) অর্জন করেন। الجزيري সাহেব তার জীবনকাল জুড়ে ফিকহ, আকীদাহ, নাহু-সরফ সহ বিভিন্ন শাস্ত্রে অবদান রেখেছেন। তিনি 1360 হিজরীতে (1941 খ্রিস্টাব্দ) মৃত্যুবরণ করেন।
প্রকাশনা ও খণ্ড সংখ্যা
এই কিতাবটি হচ্ছে পাঁচ খণ্ডে বিভক্ত।প্রথম খণ্ডে প্রধানত عبادات (নামের বিধি, রোজা, হজ্জ, ইত্যাদি) আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ডে المعاملات (লেনদেন, বেচাকেনা, ঋণ, বেনিফিট ইত্যাদি) বিশ্লেষণ করা হয়েছে। চতুর্থ খণ্ডের কেন্দ্র বিষয় হলো النكاح والطلاق (বিবাহ ও তালাক)। পঞ্চম খণ্ড originally পরিকল্পিত ছিল الحدود، الوقف، القضاء ও الجهاد ইত্যাদি বিষয়ের জন্য, তবে الجزيري পুরোটাই লিখে উঠতে পারেননি। পরে الجزء الخامس (كتاب الحدود) কিছুটা সম্পাদনার মাধ্যমে আলি حسن العريض সম্পাদনা করেন।
বিষয়বস্তু ও উপস্থাপন
কিতাবের মূল উদ্দেশ্য হলো চারটি সঠিক মাযহাবের ফিকহকে তুলনামূলকভাবে উপস্থাপন করা। অর্থাৎ, ইলমপ্রেমি ছাত্র যেকোনো বিষয় (যেমন নামাজ, রোজা, ন্যায্য লেনদেন ইত্যাদি) যখন সামনাসামনি মিলবে, সে চারটি মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে পারবে। প্রতিটি মাসআলা আলোচনা করার সময়: - মজমা মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি রেফারেন্সসহ দেওয়া হয়েছে, - যুক্তি ও দলিল উভয় দিক বিবেচনা করা হয়েছে, - কখনও কখনও মাযহাবগুলোর মধ্যে বিতর্ক ও তার পরে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।
অনূভুতি ও কিতাব ভালোবাসা
আমি যখন আজ এই কিতাবের কিছু অংশ পড়ি, মনে হয় যেন শব্দগুলোর মধ্যে জীবনের গতি আছে। প্রতিটি বাক্য যেন যেন তোমাকে আমাকে ডেকে আনে আরও পড়ার দিকে। কিতাবের ভাষা এমন স্বচ্ছ ও সাবলীল, যে কঠিন বিষয়ও হৃদয়কে স্পর্শ করে। আমি অনুভব করেছি—“আমি আজকের দিনটি এই কিতাবের সাথে কাটাবো”—এমন দৃঢ় সংকল্প।
উপকার ও প্রভাব
- যারা মাদ্রাসার তালেবে ইলমে অধ্যয়ন করে, তারা আজ এই কিতাব থেকে লক্ষ্যণীয়ভাবে উন্নতি করছে। - আরবি ভাষায় বাগ্মিতা, যুক্তি বিশ্লেষণ ও ফিকহের আলোচনায় স্পষ্টতা তৈরি হচ্ছে। - নতুন ছাত্র যারা ফিকহের ঘটনায় দ্বিধায় থাকে, তারা এই বই থেকে দিকনির্দেশনা পাচ্ছে। - এই কিতাব একটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে—যেখানে অন্যান্য গুছানো লেখাগুলো যুক্ত হবে।
কেন পড়া উচিত?
তুমি যদি সত্যিই ফিকহ শিখতে চাও; মাযহাবগুলোর পার্থক্য বুঝতে চাও; এবং জীবনের বিভিন্ন মাসআলায় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পেতে চাও—তবে এই কিতাব অপরিহার্য। যদিও পুরোপুরি পড়া কঠিন হবে, তুমি ধাপে ধাপে অংশ মুতালাআ করলেই তুমি অনেক সমৃদ্ধি পাবে।
শেষ কথায়
আজ বৃহস্পতিবার, আমি কিছু অংশ পড়েছি এই কিতাবের—মধুর অভিজ্ঞতা। সেই যে কৌতূহল জাগেছিল, তা আজ পূরণ হওয়ায় কি এক অপূর্ব আনন্দ! তুমি যদি ইচ্ছা করো, আমি সেই অংশগুলির অনুবাদ ও টীকা সংকলন করব—যাতে তুমি সহজে বুঝতে পারো। এই কিতাবের আলোতে তোমার পথে আল্লাহর রহমতের ছায়া বর্ষিত হোক, আমীন।
Comments
Post a Comment