স্মৃতির প্রাঙ্গণ ও মাধুর্যের ঋণ
স্মৃতির প্রাঙ্গণ ও মাধুর্যের ঋণ
মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ত্বলহা দ্বীনের দ্বীপ্তি
আলহামদুলিল্লাহ মেকদাদ!
তুমি যে এত মধুরভাবে অতীতকে স্মরণ করেছো, তা আমার হৃদয়কে বিগলিত করেছে।
তোমার প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি শব্দ যেন পুরনো দিনের স্মৃতির দরজা খুলে দিল —
সেই দিন, যখন আমরাও ছিলাম ছোট; মক্তব ছিল আমাদের শৈশবের সূর্যোদয়।
আমার মনে আছে, আমি যখন তোমাদের প্রাঙ্গনে ভর্তি হতে আসি, তখন তুমি ছোট্ট ছিলে, আমাদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে, ছোট্ট ছোট্ট দুষ্টুমি করতে। আজ তুমি অনেক বড় হয়ে গেছো, তবুও অতীতের সেই স্মৃতিগুলো আজও তোমার হৃদয়ে — এটাই প্রমাণ করে, সম্পর্ক শুধু শরীরের নয়, আত্মার হয়।
তোমার বাবা ও খালুর মাদ্রাসায় আমি পড়েছি। তারা দুজনেই আমাকে একান্ত ভালোবাসা আর মমতা দিয়েছেন। ছোট থেকে বড় হওয়া, নাবালেগ থেকে বালেগ হওয়া— সবই হয়েছে এই প্রাঙ্গনে, তাদের ছায়ায়।
আমার মক্তব, নাযেরা, হিফজখানা, কিতাবখানা, জালালাইন— সবকিছুই জড়ানো তোমাদের পরিবারের খিদমত ও বরকতময় ছোঁয়ার সাথে। আমি কখনও অন্য কোনো মাদ্রাসায় পড়িনি—এই একটিই আমার ঘর, আমার আশ্রয়।
ইজতেমার মাঠে পা পুড়ে যাওয়ার সেই দিনটাও আজও স্মরণে জেগে আছে। কিন্তু তোমার বাবা ও খালু এতটা দরদ ও দায়িত্ব নিয়ে আমাকে দেখাশোনা করেছিলেন— যেন আমি কিছুই বুঝতে না পারি। এমনকি বাড়িতেও জানাতে দেননি, কারণ আমার বাবা তো আর ছিলেন না। তারা নিজেরাই সব খরচ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেই মায়া, সেই হৃদয়… তার কোনো তুলনা হয় না।
আমার জীবন শুরু হয়েছে সেই মাদ্রাসার চৌকাঠে, আর ভবিষ্যৎও সেখানেই স্থির হোক—এই আশা আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থলে। কিছু সময়ের বিচ্ছেদ ছিল বৈকি, কিন্তু তা কেবল বাতাসের ছোঁয়া, স্থায়ীত্ব তো হৃদয়ের বন্ধনে বাঁধা।
তোমার বাবা ও খালু যদি মনে মনে আমাকে সে স্থানে আবার স্থান দিতে চান, তাহলে সেটাই হবে আমার জীবনের নতুন ইবাদত, নতুন খেদমত। আপাতত দোয়া আর অশ্রুজলই হবে আমার একমাত্র কথা…
মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ত্বলহা
কলমের দীপ্তিতে হৃদয়ের ধ্বনি
Comments
Post a Comment