নূরের পর্দা — এক অনন্য মেয়ের গল্প 🌸

মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ত্বলহা দ্বীনের দ্বীপ্তি 
 

তার নাম নূরজাহান। নামের মতোই সে ছিল নূরের প্রতিচ্ছবি—চোখে লজ্জা, অন্তরে ভালোবাসা, আর হৃদয়ে দৃঢ় ঈমান। ছোটবেলা থেকেই সে জানত, পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ভালোবাসা কেবল একটাই—আল্লাহর জন্য

যখন তার চারপাশের মেয়েরা প্রেম-ভালোবাসায় ডুবে থাকত, নূরজাহান তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলত—

“আমার ওড়নাই আমার মুকুট, আর পর্দাই আমার সৌন্দর্য।”

অনেকে তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দিয়েছে, বন্ধুত্বের অজুহাতে কাছে আসতে চেয়েছে। কিন্তু সে প্রতিবার বিনয়ের সঙ্গে বলেছে—

“আমার হৃদয় তো আগে থেকেই আল্লাহর নামে লেখা, আর আমার ভালোবাসা শুরু হবে শুধু আমার স্বামীর হাত ধরার পর থেকে।”

তার বন্ধুরা অবাক হয়ে বলত, “তুমি কেমন মেয়ে! কেউ ভালোবাসতে চাও, আর তুমি ফিরিয়ে দাও?” সে হাসতো নরম কণ্ঠে—

“আমি এমন এক ভালোবাসার অপেক্ষায় আছি, যেখানে পবিত্রতা থাকবে, যেখানে আল্লাহর রহমত থাকবে, যেখানে হালাল সম্পর্কের প্রশান্তি থাকবে।”

নূরজাহানের পর্দার সৌন্দর্য তার চেহারায় নয়, তার চরিত্রে প্রতিফলিত হতো। প্রতিদিন সে দোয়া করত—

“হে আল্লাহ, আমাকে এমন স্বামী দাও, যে আমার পর্দাকে সম্মান করবে, আর আমার হৃদয়ের ভালোবাসাকে তোমার পথে নিয়োজিত করবে।”

✨ নূরের ঘটনা ✨

একদিন এক মাহফিলে বক্তা বললেন—

“যে নারী দুনিয়ায় পর্দা রক্ষা করে, আল্লাহ তাকে আখিরাতে নূরের পর্দায় মুড়াবেন।”

এই কথা শুনে তার চোখে অশ্রু এলো। সে আরও দৃঢ় হলো নিজের প্রতিজ্ঞায়— যত দিন বিয়ে না হয়, তত দিন সে তার ভালোবাসা আল্লাহর কাছে আমানত রাখবে। আর যখন বিয়ে হবে, তখনই সে তার হৃদয় খুলে দেবে— শুধু সেই মানুষটির জন্য, যাকে আল্লাহ তার জন্য লিখে রেখেছেন।

🌷 শেষ কথা 🌷

সময় পেরিয়ে যায়, কিন্তু নূরজাহানের পর্দার প্রতি ভালোবাসা কমে না। তার চেহারার উজ্জ্বলতা দেখে সবাই বলে— “এই মেয়ের মুখে নূরের দীপ্তি।” সে শুধু মুচকি হেসে বলে—

“এই দীপ্তি কোনো প্রেমের নয়, এটা আল্লাহর সন্তুষ্টির আলো।”

এমন মেয়েরা পৃথিবীতে বিরল, যারা নিজেদের ভালোবাসাকে গোপনে আল্লাহর কাছে তুলে রাখে। তাদের জন্যই আকাশের ফেরেশতারা দোয়া করে— “হে আল্লাহ, এই পর্দার মেয়েদের জন্য নূরের পর্দা তৈরি করে দাও।”

Comments

Popular posts from this blog

“দ্বীনের দীপ্তি: ইসলামের মূল শিক্ষা”

স্মৃতির প্রাঙ্গণ ও মাধুর্যের ঋণ

📘 প্রথম সাময়িক পরীক্ষার প্রস্তুতি