হাসানাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ: আলোর পথে এক প্রেরণার নাম
হাসানাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ: আলোর পথে এক প্রেরণার নাম
আলহামদুল্লাহ, বর্তমানে হাসানাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠান দেশের দীন শিক্ষা ও দাওয়াত খেদমতে অতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাদের পরিকল্পনা বড়, উদ্দেশ্য সুন্দর, এবং গরীব ছাত্র ও ছাত্রীদের পড়াশোনায় মনোনিবেশ করানোর কাজটি তারা বহু বছর ধরে সততার ও নিষ্ঠার সঙ্গে করছে। আমার কাছে এটি শুধুমাত্র একটি দান সদকা কাজ নয়; এটি একটি আশার প্রদীপ, একটি সুযোগ, একটি সম্ভাবনার পথে পা বাড়ানো।
প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন
এইতো ‘সীরাতুন্নবী প্রতিযোগিতা’ নামে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল হাসানাহ ফাউন্ডেশন। আলহামদুল্লাহ, প্রতিভাবান ছাত্র ও ছাত্রীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ছিল; যারা সাহস ও স্মৃতি নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিল, যারা সীরাতের জ্ঞান নিয়ে মঞ্চ কখনো চুম্বিত করেছিল ও কখনো কণ্ঠে ধরা দিয়েছিল কুরআনের আলো। এই ধরনের কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মনোরল, আত্মবিশ্বাস ও দ্বীনি জ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এরা কেবল তথ্য শোনা নয়, নিজে ভাবতে শুরু করে, প্রশ্ন করতে শুরু করে, জ্ঞানের খিদে জাগে যে, “আমি কি আরও ভালো হতে পারি?”
সেবা ও স্কলারশিপ কার্যক্রম
হাসানাহ ফাউন্ডেশন গরিব, সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের সন্তানদের সহায়তা করে থাকে—শিক্ষার উপকরণ, বলবৎ শিক্ষক দ্বারা পড়াশোনা, সময়মত পরীক্ষার প্রস্তুতি ও নির্দেশনা দেওয়া। এছাড়া মাদ্রাসা জীবনের সাথে সাথে আধুনিক শিক্ষার উপাদান, ইংরেজি ভাষা, কম্পিউটার দক্ষতা ও দাওয়াতের খেদমতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ প্রদান করে থাকে। এইসব কাজগুলো শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা বাড়ায় এবং তাদের ভবিষ্যতের প্রতি আশা ও দৃষ্টিভঙ্গা পরিবর্তন করে দেয়।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
এ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য কেবল একটি বিদ্যালয় গড়ে তোলা নয়; উদ্দেশ্য হলো একটি সমাজ গঠন করা যেখানে প্রতিটি মুসলমান—ছাত্র বা ছাত্রী—দীন ও দুনিয়ার মাঝে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে শিখবে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সিরাত, আহমদিয়্যাহ, আকীদা, ফিকহ সহ বিভিন্ন ইসলামি বিষয়াবলী ও আধুনিক দক্ষতা—English, ICT, বিশ্ববোজ—সমেত উদ্যানে গড়ে উঠবে। আমি আশাবাদী, হাসানাহ ফাউন্ডেশন ইনশাআল্লাহ পুরো বাংলাদেশের শিক্ষামূলক মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি আলো হয়ে উঠবে।
আজহারীর ভূমিকা ও প্রত্যাশা
হযরত মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী সাহেব জনিত অনুমান অনুযায়ী এই প্রতিষ্ঠানকে প্রেরণা দিয়েছেন অথবা প্রেরণা দিতে পারবেন—যেখানে তিনি বাংলাদেশের সার্বিক কওমি মাদ্রাসা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত গবেষণাধর্মী শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি নিতে পারেন। এমনটি হলে, দেশব্যাপী ইসলামি শিক্ষা গরীব ও বিত্তবানের জন্য সমানভাবে পৌঁছানো সম্ভব হবে। আজহারী সাহেবের আওতায় যদি শিক্ষক ও ওস্তাদগণ সৎ, দক্ষ, সতর্ক ও হৃদয়বান হন, তাহলে বিদ্যানুশীলী মন আরও বেড়ে উঠবে।
আমার অনুভব ও পার্থনা
এই প্রবন্ধ আমি রচনা করেছি আমার অন্তরের অনুভূতির প্রকাশ হিসাবে। হাসানাহ ফাউন্ডেশনের কাজ যখন দেখি—গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের চোখে নতুন কিরণ জ্বলে ওঠে, শিক্ষার শূন্যতা কমে যায়, আত্মবিশ্বাস বাড়ে,—তখন অনুভব করি যে আল্লাহর দয়া সত্যিই চলমান। আমি গর্বিত যে এমন একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের সমাজে কাজ করছে। আমি دعا করি আল্লাহ তাঁরা আরও বিষয় বাড়ান—গবেষণামূলক মাদ্রাসা, বিশ্বমানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ, পরিবহন ও খাদ্য সহায়তা, ও উন্নত পাঠ্যক্রম। আমি আশা করি ইনশাআল্লাহ হাসানাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় পৌঁছাবে, প্রতিটি উপগ্রামে আলোর প্রদীপ ফলাবে।
চ্যালেঞ্জ ও পরামর্শ
কিন্তু কাজ অনেক; চ্যালেঞ্জও অনুগামী। অর্থ সংগ্রহ, দক্ষ শিক্ষক পাওয়া, ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের সহানুভূতি, রাষ্ট্র ও সমাজের সমর্থন সবই দরকার। পাঠদান পদ্ধতি আরও আধুনিক হতে হবে; ইংরেজি, কম্পিউটার, বিজ্ঞানেও সুষম গুরুত্ব দেয়া হবে। মাদ্রাসার পাঠক্রমে গবেষণামূলক বিষয়াবলী সংযোজন করা হবে। শিক্ষার্থীদের বক্তৃতা, লেখা ও আলোচনা-পর্ব গড়ে তোলা হবে যাতে তাদের আত্মবিশ্বাস ও চিন্তার গভীরতা বৃদ্ধি পায়।
শেষ কথা,,
খোলাসা কথা হল, হাসানাহ ফাউন্ডেশন একটি আলোর প্রদীপ; যার আশায় গরিব-দ্বিত্ত-সুবিধাবঞ্চিত অনেক ছাত্র-ছাত্রী তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তাদের উদ্দেশ্য-লক্ষ্য অত্যন্ত মহান; তাদের কাজ সৎ ও ফলপ্রসূ। ইনশাআল্লাহ, আজহারী সাহেবের নেতৃত্বে ও সবার সমর্থন পেলে এই ফাউন্ডেশন শুধু একটি নাম হবে না, একটি আন্দোলন হবে, একটি আলোকবর্তিকা হবে, যে আলোর মাধ্যমে দেশজুড়ে ইসলামের শিক্ষা হ্রদয় ধর্মে মজবুত হবে। আমি এই কাজের অংশ হতে চাই, এই আলোকে নিজেকে নিবেদিত করতে চাই, এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এই সুশ্রী সেবার প্রতিদান দুনিয়া ও আখিরাতে দান করুন। আমীন।
Comments
Post a Comment